কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স কাকে বলে?

পরিবাহী পদার্থের মধ্যকার মুক্ত ইলেকট্রন সমূহ একটি নিদ্রিষ্ট দিকে প্রবাহিত হওয়ার হারকেই কারেন্ট বলে। ইহাকে I বা i দ্বারা প্রকাশ করা হয়, এর একক অ্যাম্পিয়ার (A বা Amp.) অথবা কুলম্ব/সেকেন্ড ।

  • কারেন্ট কে আবিস্কার করেন ও কত সালে? সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা কে চালু করেন?

ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে ১৮২০ থেকে ১৮৩০ এর দশকে প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদনের বুনিয়াদী তত্ত্ব আবিস্কার করেন। তাঁর আবিস্কৃত সেই প্রাথমিক তত্ত্বের উপরে ভিত্তি করেই আজো বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়ে আসছে। তাই তাকে বিদ্যুতের আবিষ্কারক বলা হয় এবং টমাস আলভা এডিসন সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেন

২। ভোল্টেজ কাকে বলে?

পরিবাহী পদার্থের পরমাণুগুলির মুক্ত ইলেকট্রন সমূহকে স্থানচ্যুত করতে যে বল বা চাপের প্রয়োজন সেই বল বা চাপকেই বিদ্যুৎ চালক বল বা ভোল্টেজ বলে। একে V দ্বারা প্রকাশ করা হয় এর একক Volts.

৩। রেজিষ্ট্যান্স কাকে বলে?

পরিবাহী পদার্থের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় পরিবাহী পদার্থের যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারণে উহা বাধাগ্রস্ত হয় উক্ত বৈশিষ্ট্য বা ধর্মকেই রোধ বা রেজিষ্ট্যান্স বলে। এর প্রতীক R অথবা r, আর একক ওহম (Ω)।

৪। ট্রান্সফরমার কি?

ট্রান্সফরমার একটি ইলেক্ট্রিক্যাল মেশিন যা পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎকে (Alternating current) এক ভোল্টেজ থেকে অন্য ভোল্টেজে রূপান্তরিত করে। ট্রান্সফরমার স্টেপ আপ অথবা স্টেপ ডাউন দুই ধরনের হয়ে থাকে এবং এটি ম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন (Magnetic induction) নীতি অনুসারে কাজ করে। ট্রান্সফরমারে কোন চলমান/ঘূর্ণায়মান অংশ থাকে না, এটি সম্পূর্ণ স্থির ডিভাইস। ট্রান্সফরমারে দুটি উইন্ডিং থাকে, প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উইন্ডিং । প্রাইমারি ওয়াইন্ডিয়ে ভোল্টেজ প্রদান করলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয় এবং ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স আয়রন কোরের মধ্য দিয়ে সেকেন্ডারি ওয়াইন্ডিয়ে যায় এবং সেখানে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়।

যার ফলশ্রুতিতে সেকেন্ডারি কয়েলে ভোল্টেজ পাওয়া যায়। ট্রান্সফরমারের ভোল্টেজ পরিবর্তনের হার প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলের প্যাঁচ সংখ্যার হারের উপর নির্ভর করে। তবে মনে রাখবেন, ট্রান্সফরমার শুধু ভোল্টেজের পরিবর্তন ঘটায় কিন্তু পাওয়ার ও ফ্রিকুয়েন্সি অপরিবর্তিত থাকে। পাওয়ার ঠিক থাকে তাই ভোল্টেজ পরিবর্তনের জন্য কারেন্টেরও পরিবর্তন হয়।

৫। ট্রান্সফরমেশন রেশিও কি?

উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের উভয় দিকের ইন্ডিউসড ভোল্টেজ এবং কারেন্ট ও কয়েলের প্যাচের সংখার সাথে একটি নির্দিষ্ট অনুপাত মেনে চলে, ইহাই ট্রান্সফরমেশন রেশিও বা টার্ন রেশিও। ইহাকে সাধারণত a দ্বারা প্রকাশ করা হয়, অর্থাৎ a = Ep/Es = Np/Ns = Is/Ip

৬। ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার কি?

CT (Current Transformer) ও PT (Potential Transformer)-কে ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার বলা হয়।

CT (Current Transformer)ঃ এটি সাধারণত কম রেঞ্জের মিটার দিয়ে সার্কিটের বেশি

পরিমান কারেন্ট পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

PT (Potential Transformer)ঃ এটি সাধারণত কম রেঞ্জের মিটার দিয়ে সার্কিটের বেশি পরিমান ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। CT ও PT এভাবে ব্যবহার করা হলে এগুলোকে ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার বলে।

৭। সার্কিট ব্রেকার কি?

সার্কিট ব্রেকার সার্কিট ব্রেকার হলো একটি বৈদ্যুতিক সুইচিং ডিভাইস যা দ্বারা ইলেকট্রিক্যাল

সার্কিটকে সাপ্লাই হতে সংযুক্ত ও বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে এটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটে নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষন যন্ত্র হিসাবে কাজ করে। ওভার লোড বা শর্ট সাকিট দেখা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঐ ইলেকট্রিকাল সার্কিটকে সরবরাহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তবে সার্কিট ব্রেকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্কিটে সংযোগ করেনা ।

৮। আইসোলেটর কি?

আইসোলেটর বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ট্রান্সফরমারকে নো-লোড অবস্থায় বা সামান্য লোড অবস্থায় লাইন হতে বিচ্ছিন্ন করার জন্য আইসোলেটর ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ আইসোলেটর এক ধরনের সুইস, যা অফলাইনে অপারেটিং করা হয়।

৯। সাব-স্টেশন কাকে বলে?

পাওয়ার সিস্টেম ব্যবস্থায় সাব-স্টেশন এমন এক কেন্দ্র যেখানে এমন সব সরঞ্জামাদির ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য যেমন- ভোল্টেজ, এসি/ডিসি কনভার্সন, ফ্রিকুয়েন্সি, পাওয়ার ফ্যাক্টর ইত্যাদির পরিবর্তনে সাহায্য করে, এ ধরনের কেন্দ্রকে সাব-স্টেশন বা বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র বলে।

১০। পাওয়ার লাইন ক্যারিয়ার (PLC) কি?

যে লাইনের মাধ্যমে পাওয়ার স্টেশন, সাব-স্টেশন, রিসিভিং স্টেশনে নিজস্ব জরুরী যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা টেলিফোনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় তাকে পাওয়ার লাইন ক্যারিয়ার (PLC) বলে।

১১। Q-ফ্যাক্টর কি?

AC সার্কিটে সিরিজ রেজোন্যান্সের সময় সার্কিটের L অথবা C এর আড়াআড়িতে ভোল্টেজ প্রয়োগকৃত ভোল্টেজের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। রেজোন্যান্সের কারনে সৃষ্ট এই ভোল্টেজ বেড়ে যাওয়াকে সিরিজ রেজোনেন্ট সার্কিটের Q-ফ্যাক্টর (Quality Factor) বলে।

১২। পাওয়ার ফ্যাক্টর কি?

পাওয়ার ফ্যাক্টর হল একটিভ পাওয়ার অর্থাৎ যে পাওয়ার আমরা ব্যবহার করতে পারি এবং এ্যপারেন্ট পাওয়ারের অনুপাত। ইহাকে cosθ দ্বারা প্রকাশ করা হয়, যার মান 0 হতে 1 পর্যন্ত।

১৩। লোড ফ্যাক্টর কি?

গড় লোড এবং সর্বোচ্চ চাহিদার অনুপাতকে লোড ফ্যাক্টর বলে।

Load Factor = Average load/Max. Demand or Peak load. এর মান ১ এর নিচে হয়।

১৪। প্লান্ট ফ্যাক্টর কি?

কোন পাওয়ার প্লান্টের গড় লোড এবং নির্ধারিত রেটেড ক্যাপাসিটির অনুপাতকে প্লান্ট ফ্যাক্টর বলে।

Plant Factor = Average load/ Rated capacity of the plant

১৫। ডিমান্ড ফ্যাক্টর কি?

প্লান্টের সর্বোচ্চ চাহিদা এবং সংযুক্ত লোডের অনুপাতকে ডিমান্ড ফ্যাক্টর বলে।

Demand Factor = Max. Demand/ Connected Load.

১৬। ফরম ফ্যাক্টর কি?

কোন সাইন ওয়েভের কার্যকরী মান (RMS value) এবং গড় মান (Average Value) এর অনপাতকে ফরম ফ্যাক্টর (Form Factor) বলে। একে Kf দ্বারা

প্রকাশ করা হয় যার মান 1.11.

 

১৭। পিক ফ্যাক্টর কাকে বলে?

কোন সাইন ওয়েভের সর্বোচ্চ মান (Max. value) এবং কার্যকরী মান (RMS value) এর অনুপাতকে পিক ফ্যাক্টর (Form Factor) বলে। একে Ka দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার মান 1.41.

১৮। স্কিন ইফেক্ট কি?

AC বিদ্যুৎ প্রবাহ কোন পরিবাহির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সে পরিবাহির ভিতরে প্রবেশ না করে উহার সারফেস দিয়ে প্রবাহিত হতে চেস্টা করে, এটাকে স্কিন ইফেক্ট বলে। এই স্কিন ইফেক্ট এর ফলে লাইনের রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি পায় যার ফলে লাইন লসও বেড়ে যায়।

১৯। করোনা ইফেক্ট কি?

যখন দুইটি কন্ডাক্টর এর স্পেসিং ব্যাসের তুলনায় বেশি অবস্থায় রেখে তাদের আড়াআড়িতে AC ভোল্টেজ প্রয়োগ করে ধীরে ধীরে বাড়ানো হয় তখন একটি পর্যায় আসে। এই বিশেষ পর্যায় কন্ডাক্টরের চারপাশে বাতাস ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক স্ট্রেস হয়ে আয়নিত হয় এবং বাতাসের ইন্সুলেশন স্ট্রেংথ ভেঙ্গে যায়। এই অবস্থায় কন্ডাক্টরের চারপাশে জিম জিম শব্দসহ হালকা অনুজ্জ্বল বেগুনী রশ্মি দেখা যায় এবং ওজন গ্যাসের সৃষ্টি হয়, এই অবস্থাটিকে করোনা ইফেক্ট নামে পরিচিত।

২০। প্রক্সিমিটি ইফেক্ট কি?

সমান্তরাল দুইটি পরিবাহীর কারেন্ট যদি পরস্পর বিপরীতমুখী হয়, তাহলে উভয় পরিবাহীর নিকটবর্তী অংশে কারেন্ট ডেনসিটি বেড়ে যায়। আবার একমুখী কারেন্ট হলে দূরবর্তী অংশে কারেন্ট ডেনসিটি বেড়ে যায়। এ ঘটনাকে প্রক্সিমিটি ইফেক্ট বলে। ইহার প্রভাবে অসম কারেন্ট প্রবাহিত হয়, লাইনের রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি পায় এবং সেলফ রিয়াক্ট্যান্স এর মান কমে যায়।

 

২১। ফ্যারান্টি ইফেক্ট কি?

মিডিয়াম বা লং ট্রান্সমিশন লাইনে ওপেন সার্কিট বা লোড শূন্য অবস্থায় কিংবা অল্প লোডে চলার সময় প্রেরণ প্রান্ত অপেক্ষা গ্রহণ প্রান্তের ভোল্টেজের মান বেশি হতে দেখা দেয়। এই ঘটনা বা phenomenon কে ফেরান্টি ইফেক্ট বলে।

 

২২। অটো ট্রান্সফরমার সম্পর্কে বলুন।

অটো ট্রান্সফরমার এমন এক ব্যাতিক্রমী ট্রান্সফরমার যার মধ্যে কেবল একটি ওয়াইন্ডিং থাকে। ইহার কিছু অংশ প্রাইমারি আর কিছু অংশ সেকেন্ডারি, উভয় কয়েল ইলেকট্রিক্যাল ও ম্যাগনেটিক্যালি সংযুক্ত থাকে। তারপরও একে ট্রান্সফরমার বলা হয়, কারণ ইহার কার্যপ্রণালী দুই ওয়াইন্ডিং ট্রান্সফরমার এর মতই।

২৩। স্পেসিফিক রেজিস্ট্যান্স বা রেজিস্টিভিটি কি?

নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট কোন একটি পরিবাহী পদার্থের অথবা একক বাহু বিশিষ্ট কোন একটি ঘনক আকৃতির পরিবাহী পদার্থের দুটি বিপরীত তলের মধ্যবর্তী রোধ বা রেজিস্ট্যান্সকে উক্ত পরিবাহীর রেজিস্টিভিটি বা আপেক্ষিক রোধ বলে।

২৪। রেজোন্যান্ট ফ্রিকুয়েন্সি কি?

একটি AC সার্কিটে ইনডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স এর মান যাই হোকনা কেন যে ফ্রিকুয়েন্সিতে ঐ সার্কিটের ইন্ডাকটিভ রিয়েকট্যান্স (XL) এবং ক্যাপাসিটিভ রিয়েকট্যান্স (Xc) সমান হয়, সেই ফ্রিকুয়েন্সিকে রেজোন্যান্ট ফ্রিকুয়েন্সি বলে । একে fr দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

২৫। রীলে (Relay) কি?

রীলে (Relay) এমন একটি সয়ংক্রীয় ডিভাইস, যা বৈদ্যুতিক সার্কিট এ কোন ফল্ট সংঘটিত হলে, সার্কিট এর প্রটেকটিভ ডিভাইস গুলো কে সয়ংক্রীয় ভাবে অপারেট করে এবং ফল্টযুক্ত অংশ কে ফল্টবিহীন অংশ হতে আলাদা করে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।

২৬। কয়েক প্রকারের রীলের নাম বলুন?

ক) প্রাইমারি রীলে খ) সেকেন্ডারি রীলে গ) ডিরেকশনাল রীলে ঘ) ডিফারেন্সিয়াল রীলে ঙ) থার্মাল রীলে চ)ইলেক্ট্র থার্মাল রীলে ছ) রিভার্স পাওয়ার রীলে জ) সলিনয়েড এন্ড প্লাঞ্জার রীলে ঝ) ডিসট্যান্স রীলে ঞ) ওভার ভোল্টেজ ও ওভার কারেন্ট রীলে।

২৭। রিভার্স পাওয়ার রীলে কোথায় ব্যাবহার হয়?

প্যারালেল অপারেশনে কোন অল্টারনেটরের ইনপুট কোন কারণে বন্ধ হলে বা অন্য কোন ত্রুটিতে ঐ অলটারনেটর যদি বাসবার হতে পাওয়ার নেয় অর্থাৎ উল্টাদিক হতে পাওয়ার নিয়ে অল্টারনেটরটি মোটর হিসাবে কাজ করে তখন যে রিলের মাধ্যমে প্রটেকশন দেয়া হয় তার নাম রিভার্স পাওয়ার রীলে। এরকম অবস্থায় রিভার্স পাওয়ার রীলে এনারজাইজড হয় এবং ঐ অল্টারনেটরের সার্কিট ব্রেকার ট্রিপ করে সিস্টেমকে রক্ষা করে।

 

২৮। থার্মাল রীলে কোথায় ব্যাবহার হয়?

যে রীলে কারেন্ট বৃদ্ধির ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাড়া দেয়, তাকে থার্মাল রীলে বলে। এটা সাধারণত মোটর কন্ট্রোল সার্কিট,ব্যালান্স এবং আন-ব্যালান্স থ্রি-ফেজ সার্কিটে ব্যবহার করা হয়।

 

২৯। ডিফারেনশিয়াল রীলে কোথায় ব্যাবহার হয়?

ডিফারেনশিয়াল রীলে এমন এক ধরনের ডিভাইস, যা দুই বা ততোধিক ইলেকট্রিক্যাল মান বা দিকের ভেক্টর পার্থক্য, যখন একটি আগে থেকেই নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি বা কম হয় তখন এই রীলে কাজ করে সিস্টেমকে বা ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রকে রক্ষা করে।

৩০। HRC ফিউজ সম্পর্কে বলুন।

HRC এর পূর্ণরূপ হচ্ছে High Rupturing Capacity । উচ্চ কারেন্ট প্রবাহিত হয় এরকম লাইনে যে ফিউজ ব্যবহার হয় সেগুলো HRC ফিউজ। এতে চিনা মাটির তৈরি কেসিং এর মধ্যে ফিউজ তার সংযুক্ত থাকে। ফিউজ তারের চারদিকে বালু বা চক পাউডার এবং কেসিং এর দু-মাথায় দুটি পিতলের ঢাকনা থাকে। ফিউজ তার উভয় ঢাকনার সাথে সংযুক্ত থাকে।

৩১। BPDB ও PGCB কি?

বিপিডিবি (BPDB – Bangladesh Power Development Board): বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড। অর্থাৎ যেকোন জায়গা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ বাংলাদেশে এক মাত্র এরাই করে থাকেন। অন্য কোন কোম্পানি এটা করতে পারে না।

পিজিসিবি (PGCB – Power Grid Company Bangladsh): পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ। শুধু মাত্র এনারাই পুরো বাংলাদেশে পাওয়ার ট্রান্সমিশন করে থাকে। তার মানে দেশে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন করাই এদের মূল কাজ।

৩২। আর্থ রেজিস্ট্যান্স কি ভাবে মাপা হয় ?

উ : মেগার আর্থ টেস্টারের সাহায্যে অথবামোটামুটি ভাবে একটি ১০০ওয়াটের বাতি আর্থ তার লাইনের মধ্যে সংযোগ করার পর যদি উজ্জ্বল ভাবে জ্বলে , তাহলে আর্থিং ভাল আছে

৩৩। তিন ফেজ ২০ ঘোড়া মোটরের জন্য ক্রয়কৃত স্টার ডেল্টা স্টার্টার ১০ ঘোড়া তিন ফেজ মোটরের ব্যবহার করা যাবে কি ?

উ : হ্যাঁ, যাবে তবে কারেন্ট সেটিং এর মান কমিয়ে দিতে হবে।

৩৪। স্টার ডেল্টা স্টার্টারের ম্যাগনেটিক কয়েল কত ভোল্টেজ সাপ্লাই পায় ?

উ : সরাসরি ৪০০ ভোল্টসাপ্লাই পায়। (লাইন টু লাইন)

 

৩৫। একটি তিন ফেজ মোটরেরবডিতে টেস্ট বাতির এক মাথা সংযোগ করে অন্য মাথাসাপ্লাই এর সাথে সংযোগ করলে বাতি পূর্ণ ভাবে জ্বলে, ইহাতে কি বুঝা যায় ?

উ : মোটরের বডি ভাল ভাবে আর্থ করা হয়েছে।

৩৬। ইন্সুলেশন রেজিস্ট্যান্স কি মিটার দ্বারা মাপা হয় ?

উ : মেগার দ্বারা।

৩৭। চলন্ত অবস্থায় তিন ফেজ মোটরেরএক ফেজ চলে গেলেকি হবে ?

উ : যদি লোড বিহীন অবস্থায় থাকে তবে মোটর ঘুরতে থাকবে কিন্তু গরম হয়েযাবে এবং ভিন্ন রকম আওয়াজ করবে। আর যদি লোডেড অবস্থায় থাকে , তবে মোটরসঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে। যদি মেইন সুইচ অফ করে দেওয়া না হয়, তবে মোটরজ্বলে যাবে।

৩৮। আর্থিং রেজিস্ট্যান্স কত হওয়া বান্ছনীয় ?

উ : বাসাবাড়ীর জন্য বেশীর পক্ষে ৫ ওহম এবং সাব স্টেশন ও পাওয়ার লাইনের জন্য বেশীর পক্ষে ১ ওহম হওয়া দরকার।

৩৯। কোন ট্রান্সফরমারের কেবল মাত্র একটি কয়েল থাকে ?

উ : অটো ট্রান্সফরমার।

৪০। এক ফেজ ট্রান্সফরমার দ্বারা তিন ফেজ সাপ্লাই দেওয়া যায় কি ?

উ : হ্যাঁ যায়, ভি ভি বা ওপেন ডেল্টাকানেকশন করে।

৪১। ট্রান্সফরমার হামিং কি ?

উ : ট্রান্সফরমারের কোর এবং কয়েল কানেকশন যদি মজবুত ভাবে না করাথাকে, লুজ কানেকশন থাকে তাহলে ফুল লোড অবস্থায় কাঁপতে থাকে এবং এক প্রকারআওয়াজ হয়, তাহাই হামিং।

৪২। ট্রান্সফরমার গরম হওয়ার কারন কি ?

উ : (১) ওভার লোড হওয়ার জন্য হতে পারে

(২) ইন্সুলেশন দুর্বল হয়ে গেলে

(৩) কোথাও আর্থ হয়ে গেলে

(৪) ওভার ভোল্টেজ সাপ্লাইয়ের জন্য।

৪৩। সিলিকা জেলের স্বাভাবিক রং কি রূপ থাকে ?

উ : ভাল অবস্থায় ধব ধবে সাদা, কিন্তু জলীয় বাস্প গ্রহন করলে কিছুটা বাদামী রং এর হয়ে যায়,আবার উত্তাপ দিলে ইহা সাদা হয়ে যায়।

৪৪। ট্রান্সফরমার তৈলের কাজ কি ?

উ : ইহার প্রধান কাজ দুটি- প্রথমত ইহা ইন্সুলেশনের কাজ করে, দ্বিতীয়ত ট্রান্সফরমারকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্যে করে।

৪৫। ব্রিদার কি ?

উ : ইহা ট্রান্সফরমারের কনজার্ভেটরের সহিত লাগানো থাকে, যার মাধ্যমে বাহির হতে ঠান্ডা বাতাস ফিল্টার হয়ে ট্যাংকে ঢুকে এবং গরম বাতাস ট্যাংক হতে বাহির হয়ে যায়।

৪৬। বুকল্স রিলে কি ?

উ : ইহা এক প্রকার রিলে যাহা ট্রান্সফরমারের ট্যাংক ও কনজার্ভেটরেরসংযোগকারী পাইপের মধ্যে বসানো থাকে এবং ট্রান্সফরমারের ভিতরেত্রুটি দেখাদিলে সর্তক ঘন্টা বাজিয়ে থাকে।

৪৭। গার্ড ওয়্যার কি ?

উ : ট্রান্সমিশন লাইনের নীচে ব্যবহ্নত তার, যাহা আর্থের সহিত সংযোগ থাকে।

৪৮। ব্যাটারীর সলিউশন তৈরির সময় এসিড পানিতে না পানি এসিডে মিশাতে হয় ?

উ : এসিড পানিতে মিশাতে হয়।

৪৯। জাম্পার কি ?

উ : মেইন লাইন হতে বাসা বাড়ীতে সাপ্লাই লাইনের সংযোগ রক্ষাকারী তার।

৫০। ডেম্পার ওয়্যাইন্ডিং কি ?

উ : সিনক্রোনাস মোটরকে র্স্টাট দেওয়ার জন্য ইহার পোলের উপর মোটাতারের ওয়্যাইন্ডিং দেওয়া হয় এবং ইহা অল্টারনেটরে ও ব্যবহ্নত হয় হান্টিং দোষকমানোর জন্য।

৫১। সি.বি কি ?

উ : সার্কিট ব্রেকার যাহা ক্রটি পূর্ণলাইনকে আপনা আপনি র্সোস হতে বিচ্ছিন্ন করে।

৫২। এ.সি কে ডি.সি এবং ডি.সি কে এ.সি  কি ভাবে করা হয় ?

উ :এ.সি কে ডি.সি করা হয় রেকটিফায়ার ও রোটারী কনভার্টার দ্বারা এবং ডি.সি কে এ.সি করা হয় ইনভার্টার দ্বারা।

৫৩। ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স এর মধ্যে পার্থক্য কি?

ইলেক্ট্রিক্যাল হচ্ছে, কারেন্ট প্রবাহের উত্‍স এবং সাপ্লাই নিয়ে আলোচনা করে। বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক্যাল সার্কিট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যা AC তে কাজ করে।আর,

ইলেক্ট্রনিক্স বিদ্যুত্‍ প্রকৌশলের একটি শাখা যেখানে ভ্যাকিউম টিউব, গ্যাস অথবা অর্ধপরিবাহী (semi conductor) যন্ত্রাংশের মধ্য দিয়ে ইলেক্ট্রনের প্রবাহ, সীমাবদ্ধতা, ব্যবহারিক আচরণ ও প্রক্রিয়া আলোচিত হয়। এটি DC তে কাজ করে।

৫৪। AC ও DC এর মধ্যে মূল পার্থক্য কি ?

Ac হল দ্বিমুখী প্রবাহ আর Dc হল এক মুখি প্রবাহ

AC হচ্ছে বিদ্যুতের দ্বিমুখী প্রবাহ যা আমরা বাড়ী বা ইন্ড্রাস্ট্রিতে পাই এবং সরবরাহ করা হয় পাওয়ার ইউটিলিটি গ্রিড থেকে। DC হচ্ছে বিদ্যুতের একমুখী প্রবাহ যা আমরা পাই ব্যাটারি থেকে।

AC= Alternating Current

DC= Direct Current

AC হল পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎ প্রবাহ।

DC হল অপরিবর্তনশীল বিদ্যুৎ প্রবাহ।

AC কারেন্ট একটি দিকবর্তী প্রবাহ । যা প্রতি সেকেন্ডে ৫০ থেকে ৬০ বার দিক পরিবর্তন করে থাকে । অপর দিকে DC হচ্ছ অপ্রত্যাবর্তী প্রবাহ । যা সময়ের সাথে দিক পরিবর্তন করে না ।

৫৫। ফ্যান আস্তে অথবা জোরে যেভাবে ছাড়া হোক বিদ্যুৎ কি একই খরচ হয়?

আমরা সাধারণত দুই প্রকারের ফ্যান রেগুলেটর ব্যবহার করে থাকি। (ক) ইলেকট্রিক্যাল রেগুলেটর (খ) ইলেকট্রনিক রেগুলেটর। ইলেকট্রিক্যাল রেগুলেটর তৈরি হয় ট্যাপিং যুক্ত ইন্ডাকটরের দ্বারা। বৈদ্যুতিক ফ্যান চলার সময় এই রেগুলেটর কমিয়ে দিলে ফ্যানের রোটেশন কমে কিন্তু রেগুলেটর উত্তপ্ত হয়। এই অপ্রয়োজনীয় উত্তাপের কারনে বৈদ্যুতিক পাওয়ার খরচ হয়। ফলে ইলেকট্রিক্যাল রেগুলেটর ব্যবহার করলে ফ্যানের গতি কম-বেশির সাথে রেগুলেটর লস যথাক্রমে বেশি ও কম হয় ফলে বৈদ্যুতিক পাখার গতি যাই হোক, বিদ্যুৎ খরচ প্রায় একই হয়।

অন্যদিকে ইলেকট্রনিক রেগুলেটর তৈরি হয় থাইরিস্টর জাতীয় ইলেকট্রনিক সুইচিং ডিভাইস দিয়ে। এতে অপ্রয়োজনীয় উত্তাপের পরিমাণ অত্যন্ত নগন্য থাকায় রেগুলেটর লস হয় না বললেই চলে। ফলে বৈদ্যুতিক পাখার গতি কমালে বিদ্যুৎ খরচ কমে এবং পাখার গতি বাড়ালে বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে। তাই ইলেকট্রনিক রেগুলেটর ব্যবহার করলে ফ্যানের গতি কম হলে বিদ্যুৎ খরচও কম হয় ।

৫৬। ভোল্টামিটার এবং অ্যামমিটারকে বর্তনীতে কিভাবে যুক্ত করা হয় ?

তড়িৎ বর্তনীর যে দুটি বিন্দুর বিভব প্রভেদ মাপতে হবে সেই দুটি বিন্দুর সঙ্গে ভোল্টামিটারকে সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত করা হয় । আবার কোনো তড়িৎ বর্তনীর প্রবাহমাত্রা পরিমাপ করতে অ্যামমিটারকে তড়িৎবর্তনীতে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করা হয় ।

আমিটারকে বর্তনীর সাথে সিরিজে এবং ভোল্টমিটারকে প্যারালালে সংযুক্ত করতে হয়।

৫৭। ট্রাঞ্জডিউসার ও সেন্সরের মধ্যে পার্থক্য কি?

Transducer – ইহার Output সাধারনত Analog হয়। ইহা দ্বারা সাধারনত কোন কিছুর চাপ বা Pressure নির্নয় করা হয়। ইহার Output সাধারনত – 0 – 10V, 0 – 20mah হয়।

গঠন : ইহার ভিতরে Coil যুক্ত ডায়াফ্রাম থাকে একটি গোলাকার Iron বা Magnet দন্ডের চারপাশে মিলে, অর্থাৎ গোলাকার দন্ডের মধ্যে।

চাপ বা Pressure এর মাধ্যমে উক্ত ডায়াফ্রাম Core এর মধ্যে Up – Down করে Coil এর মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের তারতম্য ঘটায়। ঐ বিদ্যুৎ প্রবাহের তারতম্য Calculation করে Output নির্ধারণ করা হয়।

আর সাধারন Sensor দ্বারা Digital Output পাওয়া যায়।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

যে সকল ডিভাইস এক প্রকার শক্তিকে আরেক প্রকার শক্তিতে রুপান্তর করে তাহাই ট্রান্সডিউসার।

আর ট্রাসডিউসারকে যখন বিশেষ উদ্দেশ্যে তৈরি কোন যন্ত্রের সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয় তখ তাকে ঐ যন্ত্রের সেন্সর বলা হয়।

৫৮। এ্যামপিয়ার টার্ন কি?

ম্যাগনেটিক সার্কিটের তারের পেঁচ ও প্রবাহিত কারেন্টের গুণফলকে এ্যামপিয়ার টার্ন বলে। এটি ম্যাগনেটো মোটিভ ফোর্স বা এম.এম.এফ. এর একক।

এ্যামপিয়ার টার্ন AT, কারেন্ট I এবং তারের পেঁচ সংখ্যা N হলে,

AT = IN

৫৯। রিল্যাকট্যান্স কি?

ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স পথের বাধাকে রিল্যাকট্যান্স বলে।

এটি ইলেকট্রিক সার্কিটের রেজিস্ট্যান্সের মত। এর প্রতীক R এবং একক এ্যামপিয়ার টার্ন/ওয়েবার।

দৈর্ঘ্য L, এ্যাবসলিউট পারমিয়্যাবিলিটি µ, ভ্যাকুয়ামে এ্যাবসলিউট পারমিয়্যাবিলিটি µ০ ক্ষেত্রফল A হলে,

R = L/µ0µA

৬০। ইলেকট্রো স্ট্যাটিক ফিল্ড কি?

যে স্থানে একটি একক চার্জ যে বল অনুভব করে তাকে ইলেকট্রো স্ট্যাটিক ফিল্ড বলে।

৬১। বৈদ্যুতিক বল রেখার বৈশিষ্ট্য কি?

১. বৈদ্যুতিক বল রেখা পজেটিভ চার্জ হতে বের হয়ে নেগেটিভ চার্জে শেষ হয়।

২. বল রেখাগুলো খোলা ও বক্র।

৩. বল রেখাগুলো পরস্পরকে কখনও ছেদ করে না।

৪. বল রেখাগুলো দৈর্ঘ্য বরাবর সংকুচিত হয়।

৫. বল রেখাগুলো পরস্পরের উপর পার্শ্ব চাপ দেয়।

৬২। ওহম এর সূত্রটি লিখ? এর ব্যাখ্যা দাও। 

উত্তরঃ 

Ohm's Law: “নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোন একটি পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট পরিবাহীর দুই প্রান্তের মধ্যকার বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক এবং রেজিস্ট্যান্সের ব্যাস্তানুপাতিক।“

ওহমের সূত্রের ব্যাখ্যাঃ

এখানে সমানুপাতিক বলতে বুঝায়, যদি পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যকে দ্বিগুণ করা হয় তাহলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুৎ প্রবাহ দ্বিগুণ হবে। আবার যদি পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য এক তৃতীয়াংশ করা হয় তাহলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুৎ প্রবাহ এক-তৃতীয়াংশ হবে।

যদি কোন পরিবাহির মধ্য দিয়ে I amp কারেন্ট প্রবাহিত হয়, ওই পরিবাহির দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য Vy - Vx = V volt হয় এবং রেজিস্ট্যান্স যদি R ohm হয়, তাহলে ওহম এর সূত্রানুসারে,

I = V / R

এখানে,

I = কারেন্ট (অ্যাম্পিয়ার),

V = ভোল্টেজ বা বিভব (ভোল্ট),

R = রেজিস্ট্যান্স বা রোধ (ওহম)।

যেহেতু, I = V / R অর্থাৎ, কারেন্ট = ভোল্টেজ / রেজিস্ট্যান্স,

অতএব, V = I x R অর্থাৎ, ভোল্টেজ = কারেন্ট x রেজিস্ট্যান্স,

এবং R = V / I অর্থাৎ, রেজিস্ট্যান্স = ভোল্টেজ / কারেন্ট।

অর্থাৎ, ভোল্টেজ বাড়লে বিদ্যুৎ প্রবাহ বাড়বে ও ভোল্টেজ কমলে বিদ্যুৎ প্রবাহ কমবে। এবং রেজিস্ট্যান্স বাড়লে বিদ্যুৎ প্রবাহ কমবে এবং রেজিস্ট্যান্স কমলে বিদ্যুৎ প্রবাহ বাড়বে।

০১। প্রশ্নঃ ইঞ্জিন কাকে বলে ?

উত্তরঃ ইঞ্জিন বলতে মূলত সয়ংক্রিয় যন্ত্র কে বুঝায়। যা জ্বালানি দহনের মাধ্যমে তাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজে চলে এবং যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে অন্যান্য যন্ত্রাদি কে চালায় তাকে ইঞ্জিন বলে।

০২। প্রশ্নঃ ইঞ্জিন কত প্রকার কি কি?

উত্তরঃ ইঞ্জিন দুই প্রকারঃ

১. আই সি ইঞ্জিন বা অন্তর্দহ ইঞ্জিন ( Internal Combustion Engine)।

যে ইঞ্জিনের সিলিন্ডারের দহন প্রকোষ্ঠে বা অন্তর্দেশে বাতাস ও জ্বালানির মিশ্রণ কে দহন ঘটিয়ে শক্তি উৎপাদন করে তাকে অন্তর্দহ ইঞ্জিন বলে।

২. ই সি ইঞ্জিন বা বহির্দহ ইঞ্জিন (External Combustion Engine)।

বহির্দেশে বাতাস ও জ্বালানির মিশ্রণ কে দহন ঘটানো। (Its Impossible).

আই সি ইঞ্জিন এর প্রকারভেদঃ

জ্বালানি অনুসারে ৩ প্রকার

ক) পেট্রোল বা গ্যাসোলিন ইঞ্জিন

খ) ডিজেল ইঞ্জিন

গ) গ্যাস ইঞ্জিন।

প্রজ্জলন অনুসারে ২ প্রকার

ক) স্পার্ক ইগনেশন

খ) কমপ্রেশন ইগনেশন

 

স্ট্রোক এর সংখ্যা এর উপর ২ প্রকার

ক) দুই স্ট্রোক

খ) চার স্ট্রোক

ভালভ এর অবস্থান অনুসারে ৪ প্রকার

ক) L Head বা সাইড ভালভ ইঞ্জিন।

খ) I-Head বা ইনলাইন ভালভ ইঞ্জিন।

গ) F-Head ইঞ্জিন।

ঘ) T-Head ইঞ্জিন।

সংক্ষেপে LIFT বলে।

সিলিন্ডারের সংখ্যা অনুযায়ী ইঞ্জিনকে নিম্ন লিখিত ভাগে ভাগে করা যায়।যথাঃ-

১) এক সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

২) দুই সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

৩) তিন সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

৪) চার সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

৫) ছয় সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

৬) আট সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

কুকিং সিস্টেম অনুযায়ী ইঞ্জিন দুই প্রকার।যথাঃ-

১)এয়ার কুলিং ইঞ্জিন।

২)ওয়াটার কুলিং ইঞ্জিন।

সিলিন্ডার এবং বিন্যাশ অনুযায়ী ইঞ্জিন কে নিম্ন লিখিত ভাগে ভাগ করা যায়।যথাঃ-

১)ইনলাইন ইঞ্জিন।

২)ভি-টাইপ ইঞ্জিন।

৩)রেডিয়েল টাইপ ইঞ্জিন।

৪)অপজাড সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

৫)রেডিয়াল সিলিন্ডার ইঞ্জিন।

০৩। প্রশ্নঃ ডিজেল ইঞ্জিন কি?

হাই কম্প্রেশন-ইগনিশন ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিন৷ সিলিন্ডারের ভিতরে শুধু হাওয়াকে কম্প্রেশন করিয়া অত্যাধিক উত্তাপ সৃষ্টি করিয়া থাকে ৷ হাই স্পীডে ডিজেল ফুয়েলকে জালাইয়া তাপ শক্তি উৎপন্ন করে৷

০৪। প্রশ্নঃ ডিজেল ইঞ্জিন আবিস্কার হয় কত সালে? আবিস্কারকের নাম?

উত্তরঃ ডঃ রুডলফ ডিজেল এবং 1893

০৫। প্রশ্নঃ পেট্রোল ইঞ্জিন কি?

উত্তরঃ

০৬। প্রশ্নঃ সি.আই.ই(CIE) ও এস.আই.ই(SIE) বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ CIE = Compression Ignition Engine.

(ডিজেল ইঞ্জিনকে বোঝায় ) ও

SIE= Spark Ignition Engine (পেট্রোল ইঞ্জিনকে বোঝায়)

০৭। প্রশ্নঃ ইঞ্জিন কী?

উত্তরঃ ইঞ্জিন হলো বহু যন্ত্রাংশের সহযোগে গঠিত একটি বিশেষ যন্ত্র। যেটি নিজে চালিত হয়ে তাপশক্তিকে গতিশক্তিতে রুপান্তরিত করে।

০৮। প্রশ্নঃ ইঞ্জিনের পাওয়ার কি?

একক সময়ে ইঞ্জিন সিলিন্ডারের অভ্যান্তরে উৎপাদিত কাজকে ক্ষমতা (POWER) বলে৷আবার কাজ করার হারকে ক্ষমতা (POWER) বলে৷ক্ষমতার একক ওয়াট (WATT) ৷ইঞ্জিনের ক্ষমতা নিভর করে টকের উপর।

০৯। প্রশ্নঃ ইঞ্জিন ইফিসিয়েন্সি বলতে কি বুজায়?

উত্তর: ইঞ্জিনের ইফিসিয়েন্সি বলতে উহার কজের দক্ষতা বুঝায়।কাজের দক্ষতা শব্দের অথ প্রয়োগকৃত কাজ এবং উহা হতে প্রাপ্ত কাজের মধ্যে সম্পক বা অনুপাতকে বুঝায় । ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে কোন ইঞ্জিন হতে যে পরিমান কাজ পাওয়া যায়(BHP) এবং ইঞ্জিন যে পরিমান কাজ সরবরাহ করে এই দুইয়ের অনুপাতকে ইঞ্জিন ইফিসিয়েন্সি বলে৷(BHP=Break horse power)

১০। প্রশ্নঃ ট্যাপেট ক্লিয়ারেন্স কেন রাখা হয়?

উত্তরঃ ইঞ্জিন চলাকালীন তাপে বর্ধিত Valve Stem এর জন্য বাড়তি জায়গার প্রয়োজন হয় তাই এই ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়।

খ) ট্যাপেট ক্লিয়ারেন্স বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ Valve Tip ও Rocker Tip এর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানকে Tappet Clearance বলে।

১১। প্রশ্নঃ সাইকেল বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ Crankshaft ঘুরে ঘুরে সিলিন্ডারের ভিতরে পর পর যে কার্য সম্পাদন করে তাকে Cycle বলে ।

১২। প্রশ্নঃ ইঞ্জিনে সুপার চার্জার কেন ব্যবহার করা হয়?/সুপার চার্জার এর কাজ কী?

উত্তরঃ ইঞ্জিনের Volumetric Efficiency বৃদ্ধির জন্য বায়ুমন্ডলীয় চাপের চেয়ে অধিক চাপে সিলিন্ডারে বাতাস প্রবেশ করানো Super Charger এর কাজ।

১৩। প্রশ্নঃ প্রাইমিং কাকে বলে?

উত্তরঃ ইঞ্জিন চালানোর পুর্বে উহার বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে (Bearing, Valve Mechanism) Lubrication করার পদ্ধতিকে Priming বলে। এতে Moving Parts এর Sticky ও ঘর্ষণজনিত ক্ষয়রোধ হয়।

১৪। প্রশ্নঃ অয়েল স্ক্রেপার রিং এর কাজ কী?

উত্তরঃ সিলিন্ডার ওয়াল হতে অতিরিক্ত Lube Oil কে Scrapping করে Crankcase এ ফেরত পাঠানোর কাজে Oil Scrapper Ring or Oil Control Ring ব্যবহার করা হয়।

১৫। প্রশ্নঃ একটি ইনজেকটরের পাঁচটি অংশের নাম লেখ।

উত্তরঃ Nozzle, Nozzle Valve, Nozzle Valve Spindle, Nozzle Valve Spring, Pressure Adjusting Screw.

১৬। প্রশ্নঃ ইঞ্জিনের কানেকটিং রডের কাজ লেখ।

উত্তরঃ ইহা Piston এর Reciprocating Motion কে Crankshaft এর Rotary Motion এ রুপান্তরিত করে

এবং Combustion Chamber এ উৎপাদিত শক্তি ইহার মাধ্যমে Crankshaft এ স্থানান্তরিত হয়।

১৭। প্রশ্নঃ দ্বিঘাত এবং চতুর্ঘাত ইঞ্জিনের পার্থক্য লেখ।

উত্তরঃ Two Stroke এবং Four Stroke ইঞ্জিনের পার্থক্যঃ Two Stroke Four Stroke Crankshaft এর এক ঘূর্ণনে (360°) একটি Cycle সম্পন্ন হয়।

Crankshaft এর দুই ঘূর্ণনে (720°) একটি Cycle সম্পন্ন হয়।

Intake Port ও Exhaust Port/Valve থাকে । Intake

Valve ও Exhaust Valve থাকে ।

সাধারণত Beveled Piston ব্যবহৃত হয়।

সাধারণত Flat, Concave ও Crown Piston ব্যবহৃত হয়।

Fuel ও Lube Oil Consumption বেশি।

Fuel ও Lube Oil Consumption তুলনামূলক কম।

১৮। প্রশ্নঃ লুব অয়েল সিস্টেমের কয়েকটি উদ্দেশ্য লেখ।

উত্তরঃ Lubricating, Cooling, Cleaning, Sealing and Noise Reducing.

১৯। প্রশ্নঃ এয়ার ইনটেক সিস্টেমের উদ্দেশ্য সমুহ লেখ।

উত্তরঃ সিলিন্ডারে পরিস্কার ও ঠান্ডা বাতাস সরবরাহ করা, চাপ প্রয়োগে বাতাস সরবরাহ করা,সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ ঠান্ডা করা, শব্দ কমানো এবং অবশিষ্ট পোড়া গ্যাস বের করে দেওয়া।

২০। প্রশ্নঃ স্ক্যাভেঞ্জিং বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ ইন্টেক এয়ারের সাহায্যে Combustion Chamber হতে Exhaust Gas কে ধাক্কা দিয়ে বের করার পদ্ধতিকে Scavenging বলে।

ইঞ্জিনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা যা সবার জানা থাকা দরকার

1] Top Dead Centre (TDC) :- এটি crankshaft -এর সেই অবস্থানকে বোঝায় যেখানে পিষ্টনটি সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকে অর্থাৎ cylinder head থেকে এর নিকটবর্তী অবস্থানকে বোঝায় ।

2] Bottom Dead Centre (BDC) :- এটি crankshaft এর সেই অবস্থানকে বোঝায় যেখানে পিষ্টনটি সর্বনিম্ন অবস্থানকে থাকে অর্থাৎ cylinder head এর দূরবর্তী অবস্থানকে বোঝায় ।

3] Bore :- engine cylinder - এর diameter কে Bore বলা হয় ।

4] Stroke :- Piston এর TDC থেকে BDC পর্যন্ত বিচলনকে Stroke বলা হয় ।

5] Clearance Volume :- যখন Pistons টা TDC -তে থাকে সেই সময়ের Piston-এর উপরের cylinder- এর Volume কে (Combustion chamber সমেত ) Clearance Volume বলা হয় ।

6] Piston Displacement :- TDC থেকে BDC পর্যন্ত দ্রুতগতিতে পিষ্টনটি যে Volume-এ বিচলন করে তাকে Piston Displacement বলে । একে Swept Volume-ও বলা হয় ।

যদি, Cylinder bore=d , Stroke=s , ধরা হয় তাহলে Piston Displacement=Vs ধরলে , Vs=Pi/4 *d2.s ......{1}

7] Engine Capacity :- এটি সমস্ত Cylinder গুলির একত্রে Piston Displacement বা Swept Volume কে বলা হয় ।

যদি, n , সংখ্যক Cylinder থাকে , Piston Displacement কে Vs ধরা হয় , Engine Capacity = Vd তাহলে

Vd=Vs*n .......... {2}

8] Compression Ratio :- Engine- এর আধানকে কতটা পর্যন্ত Compressed করা হবে তার পরিমাণ নির্দেশ করে । Piston এর

BDC তে থাকা অবস্থায় আয়তনের সাথে Piston এর TDC তে থাকা অবস্থায় আয়তনের অনুপাত নির্নয় করে Compression Ratio নির্নয় করা হয় । Compression Ratio =r হলে

r = (Vs+Vc)/Vc ....... {3}

পেট্রোল Engine এর ক্ষেত্রে Compression Ratio 8 থেকে 10 এর উপরে থাকে । যেখানে Diesel Engine -এর ক্ষেত্রে, 15 থেকে 24 এর মধ্যে হয় ।

9] Mean Effective Pressure :- সম্পূর্ণ Power Stroke-এর মধ্যে এটি গড় কার্যকর চাপ । কার্যত Power Stroke এর সময় Cylinder Pressure টা যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয় ।

এটাকে বার (Bars) অথবা Kilo Pascals (1 Bar=100KPa) এককে প্রকাশ করা হয় ।

10] Power :- নির্দিষ্ট সময়ে কার্য করার হারকে বলা হয় । কম সময়ে একই কাজ করতে হলে বেশী কাজ করতে হলে বেশী Power দরকার হয় ।

11] Indicated Power(IP) :- Engine Cylinder-এর মধ্যে যে Power বিকশিত হয় তাকে Indicated Power বলা হয়। এটি Engine Indicator Diagram -এর ক্ষেত্রফল থেকে নির্নয় করা হয়।

12] Brake Power (BP) :- যে নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি Crankshaft-তে যায় তাকে Brake Power বলা হয় । এটি IP থেকে Engine পর্যন্ত যে পরিমাণ শক্তির অপচয় হয় তা বাদ দিয়ে প্রাপ্ত শক্তির পরিমাণ । এটি একটি Dynamometer দ্বারা পরিমাপ করা হয় এবং Killowatts(KW) Unit এ প্রকাশ করা হয় ।এটি সর্বদায় IP থেকে কম হয় (যেহেতু Reciprocating Mechanism ও Frictional Losses হয় ) ।

13] Engine Torque:- যে কোনও সময়ের সাপেক্ষে Crankshaft-এর চারিদিকে সম্পাদিত ঘুর্নন বল।

এইভাবে লেখা যায় , T=Fr ........ {4}((

যেখানে,

T=Engine Torque (Nm)

F= Force Applied to the crankshaft

r=effective crank radius (m)

যেহেতু, Power Stroke-এর সময় r এর মান পরিবর্তিত হয়ে থাকে তাই সেইসময় torque টাও পরিবর্তিত হতে থাকে ।

আবার, বাকী তিনটি Stroke-এ কোনও Torque deliver হয় না ।কাজেই engine manufacturer রা সর্বদাই engine cycle -এর সময় average torque -প্রদানের দাবি করে থাকে ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url