ডেনমার্ক কেন ১০ হাজার মানুষের মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করে রেখেছে?

ডেনমার্ক কেন ১০ হাজার মানুষের মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করে রেখেছে?

মস্তিষ্ক সংগ্রহের ইতিহাস

১৯৪৫ থেকে ১৯৮০ এর গোড়ার দিক পর্যন্ত প্রায় ১০০০০ মগজ এখানে সংরক্ষণ করা হয়। মানসিক রোগীদের মৃতদেহ থেকে বের করা ৯৪৭৯ টি মস্তিষ্ক সাউথ ডেনমার্ক ইউনিভার্সিটিতে রাখা রয়েছে। সেগুলোতে ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষিত রয়েছে।
মস্তিষ্ক সংগ্রহশালার প্রধান, প্যাথলজিস্ট, মার্টিন উইরেনফেল্ডট নিয়েলসন বলছেন, "সে সময় তারা যে দারুন কাজটা করেছিল, সেটা হল তারা ময়নাতদন্ত শেষ করে মস্তিষ্ক রেখে দিয়েছিল। যেগুলো তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিল সেগুলো তুলে রেখেছিল তাকের উপরে।" আরও বলেছিল, "হয়তো বহু বছর পর, হয়তো ৫০ বছর পর কেউ আসবে আর আজ আমরা মস্তিষ্কে সম্পর্কে যা জানি তা থেকেও বেশি জানতে পারবে।"
ডেনমার্ক কেন ১০ হাজার মানুষের মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করে রেখেছে?

মস্তিষ্ক সংগ্রহে আইনি জটিলতা

বিগত বছরগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা অনেক বদলেছে। কিন্তু সে সময় রোগীদের অধিকারে এ বিষয়টি মোটেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। ডেনমার্কের বিভিন্ন মনোরোগ কেন্দ্রে রোগীদের ময়নাতদন্তের পর তাদের মস্তিষ্কগুলো বের করে নেয়া হতো এবং তাদের মৃত্যু পূর্ব অনুমতি ছাড়াই।
ঐতিহাসিক জেসপার ভাসজি ক্রাঘ বলছেন,
"রাষ্ট্রীয় এ কেন্দ্র গুলোর ভিতরে কি ঘটছে তা নিয়ে বাহিরে থেকে কেউ কখনো কোন রকম প্রশ্ন তোলেন নি। মানসিক রোগীদের অধিকার বলতে কিছুই ছিল না। রোগীদের যেসব চিকিৎসা দেয়া হতো, তাতে তাদের মত আছে কিনা তা কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি। সে সময় মানসিক রোগীদের অন্য ডেনিশদের সমতুল্য মনে করা হতো না।"

তবে ১৯৯০ এর দশকে ডেনিশ এথিক্স কাউন্সিল রায় দেয় যে, এই মগজগুলো গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যাবে।
এই নিয়ে বিতর্কের মূলত নিষ্পত্তি হয়েছে। তারা বলছে মানসিক রোগ সম্পর্কে আরো জানার জন্য এটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও নজর কাড়া বৈজ্ঞানিক গবেষনা।

ডেনমার্ক কেন ১০ হাজার মানুষের মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করে রেখেছে?

বিগত বছরগুলোতে এই সংগ্রহ গবেষণার কাজে সাহায্য করেছে। স্মৃতিভ্রংশ এবং অবসাদ সহ বিভিন্ন মানসিক ব্যাধির গবেষণা সম্ভব হয়েছে। চলমান আরো চারটি প্রকল্পের গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে এই মগজগুলো
কোপেনহেগেন রিসার্চ হাসপাতালের সুজানা অজনার নামের এক নিউরোবায়োলজিস্ট জানিয়েছেন, "এগুলো বহু বছর আগের রোগীদের মস্তিষ্ক। এখানকার প্রচলিত চিকিৎসাগুলো সেইসময় তারা পায়নি। মস্তিষ্ক নিয়ে যখন আমরা গবেষণা করছি, তখন মনে রাখতে হবে ওই রোগীদের যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল তার প্রভাবে তাদের মস্তিষ্কে কিছু বদল হয়ে থাকতে পারে। এই ওডেন্স ব্রেইন ব্যাংকের যে মস্তিষ্ক গুলো চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যায়নি সেগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যাবে চিকিৎসা কোন প্রভাবেই মস্তিষ্কগুলোয় পড়েছে কিনা।"
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url