ইফতারে রুহ আফজা কেন খাবেন না!!!
রুহ আফজা সম্পর্কে প্রায় সবাই অবগত আছি। কিন্তু এটি আসলেই আমাদের শরীরের জন্য আদৌ উপকারী নাকি উল্টো শরীরে ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেটা না জেনেই আমরা খেয়ে থাকি। আসলে প্রায় সবাই খেয়ে থাকে বলে কারো এর পুষ্টিগুণ নিয়ে কোনো সন্দেহ হয় নি। তবে চলুন আপনাদের রুহ আফজা সম্পর্কে কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার রিপোর্ট দেই, তারপর আপনিই বিবেচনা করবেন যে, আপনি আপনার ইফতারে রুহ আফজা রাখবেন কি না।
রুহ আফজাতে কি কি উপাদান আছে?
রিফ্রাক্টোমিটারে রুহ আফজা পরীক্ষা করতে গিয়ে ৭৬% চিনির উপস্থিতি পাওয়া যায়।
অর্থাৎ এতে ৪ ভাগের ৩ ভাগে রয়েছে চিনি বা সহজে বললে চিনির শিরা। বাকি উপাদানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এতে প্রতি ১০০মি.লি তে ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রঙ, প্রিজারভেটিভস রয়েছে, যেগুলো শরীরের জন্য কোনো ক্ষতিকর উপাদান নয়। রুহ আফজা অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দিয়েও দেখা গেছে এসব উপাদান ব্যতিরকে তেমন কিছু পাওয়া যায় নি।
ইফতারে রুহ আফজা খেলে কি হয়?
আমরা যদি এতো বেশি পরিমাণে চিনিযুক্ত খাদ্য উপাদান দিয়ে ইফতার করি তাহলে আমাদের শরীরে রক্তে চিনির মাত্রা বা সুগার লেভেল হঠাৎ বেড়ে যাবে। এটাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে হাইপারগ্লাসোমিয়া। এতে আমাদের শরীর দূর্বল বা ক্লান্ত অনুভব হয়।
আলোচনা-সমালোচনা
রুহ আফজা হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ কোম্পানির একটি পণ্য। এটি ২০১০ সালে রুহ আফজার বাণিজ্যিক প্রচারণা শুরু হয়। শুরুর দিকে এটিতে অনেক খাদ্য উপাদান থাকলেও বর্তমানে সেটি নেই বললেই চলে। ২০১৮ সালের ৩০ মে, বাংলাদেশে বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচারের কারণে এটার বিপণন প্রতিষ্ঠান হামদর্দ এর ওপর নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষ আইনের ৫টি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এখন আপনি ভেবে দেখুন রুহ আফজা আপনার ইফতারের টেবিলে রাখবেন কি না।
মতামত
আপনারা ইফতারে যেকোনো চিনি যুক্ত পানীয় থেকে মধু দিয়ে শরবত তৈরি করে পান করতে পারেন। এক চামচ মধুর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে শরবত তৈরি করা যায়।মধুতে ৮০% চিনি থাকলেও মধুর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। রিজেনারেটিভ মেডিসিনের পি এই ডি গবেষক, সাব্বির আহমেদ বলেছেন, মধুতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যেমন- ফ্লাভোনয়েড, ফেনোলিক এসিড। এসকল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অনেক উপকারী। এরা আমাদের শরীরের বিভিন্ন তৈরি হওয়া ক্ষতিকর রিঅ্যাকটিভ অক্সিডেন্টকে প্রশমিত করতে পারে। রিঅ্যাকটিভ অক্সিডেন্ট প্রশমিত হলে এগুলো আমাদের কোষগুলোকে ধ্বংস করতে পারে না।
আমাদের দেহে এডিপোনেক্টিন নামে এক হরমোন
থাকে। এর কাজ হলো আমাদের শরীরের ইনফ্লামেশন কমিয়ে দেয়া আর সুগার লেভেলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
করা। আমাদের শরীরে মধু এই হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।