নাক ডাকার কারণ কী ও এর সমাধান কী?

আপনি জানেন কি- নাক ডাকার শব্দের তীব্রতা ৯২ ডেসিবল পর্যন্ত হতে পারে। শিশুদের তুলনায় বয়স্করা বেশি নাক ডাকার সমস্যায় ভোগেন। এক গবেষণায় দেখা যায়, ৬০ বছর বয়সী ৪০ ভাগ নারী এবং ৬০ ভাগ পুরুষ নাক ডাকার সমস্যায় ভোগেন। জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট এর সহকারী রেজিস্ট্রার, ডা. মাহফুজ আহমেদ বলেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় মানুষের শ্বাসনালীতে বাধার কারণে শ্বাসনালীর পেশী কাঁপতে থাকে এবং এক ধরণের শব্দ তৈরি হয়- এটাই নাক ডাকা।

British Snoring & Sleep Apnoea Association-এর ভাষ্য মতে, আমরা জেগে থাকার সময় পেশীর দৃঢ়তা শ্বাসনালীকে মজবুত ও সঠিক গঠনে রাখে বলে শব্দ হয় না।

নাক ডাকার কারণ কী ও এর সমাধান কী?

নাক ডাকার কারণ কি?

নাক ডাকা মানেই নাকের সমস্যা নয়, নাক ডাকার পেছনে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট এর সহকারী রেজিস্ট্রার, ডা. মাহফুজ আহমেদ বলেন, নাকের সমস্যা ছাড়াও নাক ডাকতে পারে। যাদের স্থুলতা রয়েছে, যারা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন, অন্য কোনো রোগে চিকিৎসার কারণে ওষুধ খাচ্ছেন, ডিপ্রেশনে ভোগা রোগীদের এ সমস্যা দেখা যায়।

নাক, নাকের পেছনের অংশ এবং গলা- এই তিনটি অংশের কোনো সমস্যা তৈরি হলে নাক ডাকার শব্দ সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও বলেন, আরও যেসব কারণে নাক ডাকার সমস্যাটা হয় তা হলো-

  • নাকের হাড় বাঁকা থাকলে
  • কোনো মাংসপেশী খুলে থাকলে
  • নাকে টিউমার থাকলে
  • নাকে বাল্বগুলো ছোট হলে
  • নাকে পিছনে টনসিল বড় থাকলে
  • গলার মধ্যে কোনো টিউমার থাকলে
  • জিহ্বা মোটা এবং লম্বা থাকলে
  • জন্মগত ভাবে চোয়াল পেছনের দিকে থাকলে

বিবিসি সাইন্স এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বয়সের সাথে সাথে নাক ডাকার সমস্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু এর সাথে শরীরের আকার এবং গঠনও জড়িত। যাদের গলা ছোট এবং প্রশস্ত থাকে, তাদের নাক ডাকার সম্ভবনা বাড়ে। কারণ ঐ ব্যক্তির ঘুমানোর সময় তার শ্বাসনালির চর্বির কারণে এটি সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। সাধারণ ভাবে বলা হয়, যাদের কলারের মাপ ১৬.৫ ইঞ্চি, তাদের নাক ডাকার সম্ভবনা বেশি

নাক ডাকার সমাধান কি?

British Snoring & Sleep Apnoea Association-এর তথ্য মতে, নাক ডাকা চাইলেই বন্ধ করা যায় না। এটি হঠাৎ করে নিরাময়ও হয় না। তবে এটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

শারীরিক অস্বাভাবিকতার কারণে মানুষ নাক ডাকে। তবে নাক ডাকার নিয়ন্ত্রণে আনার আগে জানতে হবে আপনি কোন ধরনের নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন।

ডা. মাহফুজ আহমেদ বলেছেন, ওজন বাড়ার কারণে যদি কেউ নাক ডাকেন তবে ওজন কমিয়ে ফেললে ৬ মাসের মধ্যে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

শারীরিক কোনো অঙ্গের কোনো সমস্যা থাকলে, চিকিৎসার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। বিবিসির আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শারীরিক কোনো জটিলতা না থাকলে বা কোনো অঙ্গের গঠন বিকৃত না হলে, কিছু উপায় অনুসরন করে নাক ডাকা বন্ধ করা যাবে।

  • ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন
  • ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত চার ঘন্টা আগে ভারী খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন
  • চিত হয়ে না শুইয়ে যে কোনো এক পাশে ফিরে ঘুমান(কারণ চিত হয়ে ঘুমালে জিভ গলার ওপরে পরে এবং যা মুখের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচলে বাধা দেয়।)
  • ঘরে বাতাসের আদ্রতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করুন
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url