চ্যাট-জিপিটি সম্পর্কে অবাক করা সব তথ্য!!!
চ্যাট-জিপিটি কি?
চ্যাট-জিপিটি (Chat-GPT) হলো একটা করভারসেশনাল এ.আই. (Conversational AI)। এর দ্বারা আপনি AI (Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে Chat করার মাধ্যমে কথা বলতে পারবেন। এটি এমন এক চ্যাট বট প্রযুক্তি যা আপনার প্রশ্নের বা আপনার Prompt অনুযায়ী একটি ইউনিক রকমের গঠনমূলক উত্তর, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনাকে তৈরি করে দিবে।
Chat-GPT এর পূর্ণরূপ হলো Chat
Generative Pre-trained Transformer। এটি ১৭৫ বিলিয়ন এরও বেশি প্যারামিটার ডেটার ওপর ট্রেইন
বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক অসাধারণ চ্যাট বট। এটি ও GPT-3.5 অ্যাজুর এ.আই. (Azure AI) সুপারকম্পিউটিং অবকাঠামো এর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
চ্যাট-জিপিটি এর ইতিহাস
২০১৫ সালে স্যাম অল্টম্যান ও ইলন মাস্ক
OpenAI নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করলেন। OpenAI= Open+AI, Open দিয়ে বুঝানো হয়েছে
সবার জন্য উন্মুক্ত এক AI(Artificial Intelligence) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে। তাদের উদ্দেশ্য
ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সবার ব্যবহার উপযোগী ও সহজলোভ্য করা।
কিন্তু ২০১৮ সালে ইলন মাস্ক ছেড়ে
OpenAI দেন তাঁর- Tesla (গাড়ি তৈরি কোম্পানি), SpaceX(রকেট প্রযুক্তি তৈরির কোম্পানি)
নামের কোম্পানিগুলোর জন্য। তবে তিনি স্ট্রাটেজিক ইনভেস্টর, পরামর্শক বা মেন্টর হিসেবে
থেকে গেছেন। কিন্তু সক্রিয় কোনো কর্মকান্ডে তিনি জড়িত ছিলেন না।
ইলন মাস্ক ছেড়ে যাবার ২ বছরের মধ্যে
কিছু অবাক টুলস নিয়ে আসে। সেগুলোর মধ্যে একটি হলো DELL-E- যা Image Technology, যেটি
আপনার দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোনো ছবি তৈরি করে দেয় বা আপনার দেয়া কোন ছবি আপনার
কথাতে এডিট করে দিবে। ২০২২ সালে তারা এটিকে ইন্টারনেট দুনিয়ায় এনে অভাবনীয় সাড়া ফেলে
দেয়।
আবার ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বরে Chat-GPT নতুন চমক নিয়ে আসলো মাধ্যমে। যেটি বর্তমানেও পুরো বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত এক বিষয়।
চ্যাট-জিপিটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা
“The Times” পত্রিকাতে উল্লেখ করা হয়েছে,
প্রথম কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সমাধান হিসেবে যা মানুষের পরিবর্তে জায়গা নিতে পারবে
বলে আশা করা হচ্ছে।
“The Guardian” পত্রিকা তাদের এক লেখনীতে বলেছে, অস্ট্রেলিয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন কাগজ কলমের পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতিতে ফেরত গেছে কারণ তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো পড়াশুনা বিষয়ক কাজ দেয়া হলে, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে সেগুলো সমাধান করতো এমনকি গবেষণা পত্রও তৈরি করে জমা দেয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
আপনাদের একটি অবাক করা তথ্য দিবো এখন।
ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের ১ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার
হতে সময় লেগেছিল ২ বছর, প্রিনটারেস্ট এর লেগেছিল ৫ মাস আর অ্যাংগ্রি বার্ড গেমের লেগেছিল
৩৪ দিন। কিন্তু চ্যাটজিপিটি-এর ১ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার
হতে সময় লেগেছে মাত্র ৫ দিন।
চ্যাটজিপিটি-এর ভালো দিকগুলো
ওপেন ডোমেইন কনভারসেশন এজেন্ট: আগে
জেনে আসি ক্লোজ ডোমেইন কনভারসেশনটা কি- এটি হলো এমন এক সিস্টেম যেখানে কোনো নির্দিষ্ট
বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর বা আলোচনা করা যায় যেমন- সেলস চ্যাটবট।
কিন্তু ওপেন ডোমেইন কনভারসেশন চ্যাটবটে
যেকোনো ধরনের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় এবং চ্যাটজিপিটি এই ধরনের সেবা সরবারহ
করছে।
শিক্ষাসংক্রান্ত চ্যাটবট: এই প্রযুক্তি
শিক্ষার্থীদের শেখার যাত্রাকে সহজ করে দিয়েছে। এটি প্রশ্নের উত্তর, অ্যাসাইনমেন্ট থেকে শুরু করে পার্সোনালাইজড
স্টাডি প্লান্স সরবারহ করছে।
গবেষণামূলক রিপোর্ট প্রকাশ: এটি সম্পূর্ণ
পরিপূরক না হলেও এক অসাধারণ সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এমন অনেকে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার
করে গবেষণা পত্রও প্রকাশ করেছেন যেটা বিজ্ঞানীরাও ধরতে সামথ্য হন নি।
স্বাস্থ্যসেবামূলক চ্যাটবট: এটি ব্যবহার
করা যেতে পারে রোগীদের সুস্থতা বিষয়ক তাৎক্ষণিক পরামর্শক হিসেবে।
ডেটা বিশ্লেষণ: এটি যেকোনো ধরনের তথ্য
অ্যানালাইসিসের জন্য ব্যবহার করা যায়।
কোডিং বা প্রোগ্রামিং শেখা: এ প্রযুক্তির
মাধ্যমে কোডিং বা প্রোগ্রামিং শেখা সম্ভব হচ্ছে। অনেক কঠিন কোডিং সমস্যার সমাধানেও
এটি কার্যকরী।