সফল হওয়ার পিছনে আইনস্টাইনের নীতি

”গতকাল থেকে শিক্ষা নিন, আজকের জন্য বাঁচুন। আশা থাকুক ভবিষ্যতের জন্য, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- প্রশ্ন করা থামাবেন না”- এটি আলবার্ট আইনস্টাইনের একটি বিখ্যাত উক্তি। তিনি এতটাই বুদ্ধিমান ছিলেন যে মৃত্যুর পর তার ব্রেইন চুরি করা হয়েছিল। তার আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ,

E=mc2

এর জন্য তিনি বিখ্যাত, যা প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী শেখে। ’থিওরি অব রিলেটিভিটি’ নিয়ে তিনি অনেক সময় যাবৎ কাজ করেছেন।

তবে তিনি যে শুধুমাত্র এই আপেক্ষিকতা সূ্ত্র এবং তত্ত্বের জন্যই বিখ্যাত এমনটা নয়। বরং তিনি শিখিয়েছেন, কিভাবে কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় সংকল্প জীবনে অসম্ভবকে অর্জন করতে সাহায্য করে। ছোট বেলায় কেউ গণিত বা বিজ্ঞানে ভালো করলে তাকে বলা হয় জুনিয়র আইনস্টাইন।

সফল হওয়ার পিছনে আইনস্টাইনের নীতি


আইনস্টাইনের জীবনেও কি কোনো বাধা ছিল?

আইনস্টাইনের জন্ম এমন সময় যখন বৈদুতিক বাল্ব আবিষ্কার করা হলো। চার বছর বয়স পর্যন্ত আইনস্টাইন কথা বলতে পারতেন না। ডাক্তার জানিয়ে দেন তার মস্তিষ্ক স্বাভাবিক মস্তিষ্কের চেয়ে অনেক বড়। মা-বাবার ভয় ছিল ছেলে হয়তো জড় বুদ্ধি সম্পন্ন হবেন। এর জন্য অবশ্য অনেক কটু কথাও শুনতে হয়েছিল তাঁকে।

স্কুল জীবনে তাঁর তেমন কোনো প্রতিভার প্রতিফলনও দেখা যায় নি। শুধুমাত্র গণিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ে তিনি শীর্ষ ছাত্র ছিলেন। তবে তার মেধা থাকা সত্ত্বেও একটি অ্যাকাডেমিক চাকুরি নিশ্চিত করতে পারে নি। তিনি ১৯০৩ সালে জার্মানির বার্নে ফেডারেল অফিস ফর ইন্টারঅ্যাকচুয়াল পেটেন্ট অফিসে ক্লার্ক হিসেবে কাজ করেন।

আইনস্টাইনের গবেষণা ও অর্জন

এর দুই বছর, আইনস্টাইন অনেক গবেষণার পর জার্নাল অ্যানাউন্স অব ফিজিক্স-এ চারটি বৈজ্ঞানিক গবেষনা পত্র প্রকাশ করেন। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্বগুলি সময়, স্থান, পদার্থ, শক্তি এবং মাধ্যাকর্ষণকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে ছিল পুরো বিশ্বের কাছে। তাঁর কাজ – পারমাণবিক শক্তি, নিয়ন্ত্রণ, মহাকাশ অনুসন্ধান এবং আলোর প্রয়োগসহ গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির দিকে নিয়ে গেছে। ১৯২১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়েছিল।

আইনস্টাইনের যে কথাগুলো আপনার জীবন বদলে দিতে পারে-

জীবনের ২০ বছর কাজ করেছেন বিজ্ঞান সাধনায়, তবে মানবতার কল্যানে সংগ্রাম করেছেন ৪০ বছর। আইনস্টাইন তাঁর জীবনের অর্জন থেকে শিখেছেন এবং সবাইকে শিখিয়েছেনও। তাঁর বলে যাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো- 

  • যদি একটি ৬ বছরের শিশুকে বুঝাতে পারা যায় তাহলে সত্যিই আপনি একজন শিক্ষক।
  • সাফল্যের জন্য প্রয়োজন অনুশীলন এবং অনুসরণ।
  • প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করতে এবং কারন অনুসন্ধান করতে হবে।
  • তিনি মনে করেন, কৌতুহল কল্পনার দরজা খুলে দেয় এবং কল্পনা আবিষ্কারের দিকে নিয়ে যায়।
  • আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন এমনটা নয় আমি সমস্যা গুলো নিয়ে বেশিক্ষন থাকি, সবকিছু একই ভাবে চিন্তা করাও যুক্তিযুক্ত নয়। সমস্য সমাধানে আমি কঠিন সময়ের মধ্যে থাকতে পছন্দ করি। আমি সহজে ব্যর্থতার কাছে নতি শিকার করি না। (তাই অধ্যবসায় দেখান এবং সাফল্য আপনাকে বেশিদিন এড়াতে পারবেনা।)
  • কর্মের ফলাফল চিন্তা না করে সঠিক পথে চলতে থাকুন সাফল্য কাছে আসবেই।
  • তাঁর মতে, ভুল করাটা অন্যায় না বরং ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে আর এগিয়ে যেতে হবে আর একই কাজ বারবার পুনরাবৃত্তি করলে জীবন কখনোই মূল্যবান হয়ে উঠে না। বরং প্রতিটি কাজকে উন্নত করার চেষ্টা করা উচিত। একই কাজ বারবার করে ভিন্ন ভিন্ন ফল আশা করাও মূল্যহীন বটে।
  • বিশেষজ্ঞ হতে হলে সেই বিষয় সম্পর্কে সবকিছু জানতে হবে।

আইনস্টাইন তাঁর জীবনে যে দিকগুলো অনুসরন করেছেন, সেগুলো কেবল বিজ্ঞানীদের অনুসরনীয় নয় বরং প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য শিক্ষনীয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url