প্রথম বৈদ্যুতিক বাল্ব তৈরিতে লেগেছিল বাঁশ! বাঁশের আরও যত গুণ

প্রথম বৈদ্যুতিক বাল্ব তৈরিতে লেগেছিল বাঁশ!

টমাস আলভা এডিসন যে বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করেছিলেন সেটির মধ্যে ছিল বাঁশের ফিলামেন্ট ব্যবহার করেছিলেন।
বাস মূলত এই ধরনের ঘাস ও চির সবুজ বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ, এটি নাতি শীতোষ্ণ ও গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় অঞ্চলে জন্মায় পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির বাস রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ৩৩ প্রজাতের বাঁশ সংরক্ষণ করেছেন। মুলি তল্লা ছুরি সহ নানা প্রজাতির বাঁশ। জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা এক রিপোর্ট অনুযায়ী বাঁশের প্রজাতি ও বৈশিষ্ট্য দিক থেকে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে রয়েছে প্রথমে রয়েছে চিন। চীনা সভ্যতায় বাঁশকে শুভশক্তির প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

প্রথম বৈদ্যুতিক বাল্ব তৈরিতে লেগেছিল বাঁশ!

প্রকৃতি পরিবেশ ও প্রাণ রক্ষায় বাঁশের ভূমিকা

দুর্যোগ মোকাবেলা পাহাড় ধ্বস ভূমি রক্ষা সহ নদী ভাঙ্গন রোধ এবং জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় বাঁশের ভূমিকা বলে শেষ করা যাবে না। World bamboo organisation তথ্য মতে, বাঁশ অন্যান্য গাছের চেয়ে বেশি অক্সিজেন উৎপাদন করে এবং বেশি মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে ফলে বাতাস বিশুদ্ধ থাকে। বাজার আশেপাশের তাপমাত্রা কে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ঠান্ডা রাখে। ফলে এটি অনেক প্রাকৃতিক এয়ার কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও তীব্র রথ থেকে লম্বা লম্বা বাঁশ ঝার ছায়া দেয়।

মাটি রক্ষা:

বাঁশ গাছের শেকড় ছড়ানো থাকায় এটি মাটি ভাঙ্গন রোধ করে। মাটির ডাল কে মজবুত করে ফলের পাহাড় ধ্বস ঠেকানো যায় ভারি শোষণ করে মাটির ক্ষয় রোধ করে। এক কথায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ঠেকাতে বাঁশের প্রয়োজন রয়েছে।

নির্মাণ: 

বাংলাদেশের শুকনো বাসের চাহিদা অন্তত ১০ লাখ টন। এরমধ্য নির্মাণ কাজের সবচেয়ে বেশি বাঁশের প্রয়োজন। চাহিদা থাকায় কুমিল্লা চাঁদপুর সিলেটে বাঁশের বাণিজ্যিক আবাদ হচ্ছে। গ্রামে বাড়ি ঘর তৈরিতে বাঁশ টেকশই উপাদান। কাঁচা বাড়ির ভিত, দেয়ালে ও ছাদ এখন বাসের ব্যবহার হয় । বাঁশের পাতায় ঘরের ছাউনি হয় আবার পাহাড়ি এলাকায় বাঁশ দিয়ে তোলা হয় মাচার ঘর। খাল-পাড় হতে বাঁশের সেতু বানানো হয়। বেড়া তুলতে বা বন্যার সময় আশ্রয়ের জন্য বড় মাচা তুলতেও বাঁশ লাগে।

বস্ত্র কাগজ ও কাগজ শিল্পে:

সুতা ও কাগজ তৈরিতে বাঁশের ব্যবহার অনেক আগে থেকে। বাসায় তন্ত্র দিয়ে টুপি স্কার্ফ, গ্লাভস, মজা এবং প্যান্ট তৈরি করা হয়। বিভিন্ন ধরনের কাগজ ও টয়লেট পেপার তৈরি করতে বাঁশের ব্যবহার হচ্ছে।

নিত্য ব্যবহার্য পণ্য:

এইতো ব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্য যেমন আসবার পত্র বাদ্যযন্ত্র রান্নাঘরের বিভিন্ন সরঞ্জাম কুলো ডালা ঝুড়ি চাটাই সেই সাথে প্লেট বাটি চামচ স্ট্র প্যান্ডেল বাঁশের তৈরি ল্যাম্প জামা কাপড়ের হ্যাঙ্গার ল্যাপটপের কেসিং ইত্যাদি নানা ধরনের পণ্য তৈরি করতে বাঁশ ব্যবহার করা হয়। বাঁশের তৈরি হস্তশিল্প পরিবেশবান্ধব যা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। এগুলো দামে স্বাস্থ্য হয় এবং রপ্তানি করে আয়ের সুযোগ থাকে।

প্রসাধনী:

বাঁশের মধ্যেও অ্যান্টিন্টি-ফাঙ্গাল এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুন থাকায় শ্যাম্পু ক্রিম সহ নানা ধরনের প্রসাধনীতে ব্যবহার হয়। সেই সাথে পোকামাকড় প্রতিশোধকের মতো পণ্য তৈরিতে বাঁশের ব্যবহার হয়।

খাদ্য:

খাদ্য হিসেবে বাঁশ এগিয়ে আছে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের কাছে খাবার বাঁশ কোড়ল নামে পরিচিত। এর তৈরি সূপ সালাদ তরকারি বেশ জনপ্রিয়। আবার বাঁশ পাতা দুধ টাটকা রাখতে সাহায্য করে। চায়ের মধ্যে দিয়েও খাওয়া যায়। রান্না করা বাঁশে ফাইবার কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন পটাশিয়াম ভিটামিন ই আয়রন পাওয়া যায় যা শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ করে। খারাপ কোলেস্টেরল কমানোর জন্য এটি হার্টের জন্য ভালো। ফাইবার থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়। বাঁশের তরকারি খাওয়ার পর এটি দীর্ঘক্ষণ খিদা লাগে না ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে বাঁশ কাঁচা বা বাসি অবস্থায় খাওয়া যাবে না কেননা পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাঁশের কোড়ল সূর্যালোক থেকে দূরে ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করতে হয়। আবার বাসের পাতা উত্তম গোখাদ্য।

যন্ত্র ছাড়াই উপকার: 

এত উপকারী উদ্ভিদের কোন যত্নের প্রয়োজন হয় না এটি যে কোন পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে মাঝেমধ্যে পানি দিলেই হয়। বাঁশ খুব দ্রুত বড় হয়। চারা রোপনের পর পাঁচ বছরে পূর্ণাঙ্গ বাগানে উপনীত হয়। বাঁশ গাছ সাধারণ গুচ্ছ হিসাবে জন্মায়। একটি গুচ্ছে ১০ থেকে ৮০ টি বাঁশ থাকতে পারে। কিছু কিছু প্রজাতির বাঁশ ২৪ ঘন্টায় ৩৬ ইঞ্চি বৃদ্ধি পায়। এর মানে প্রতি ৪০ মিনিটে এক ইঞ্চি করে বৃদ্ধি পায়। বাঁশ যেন নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে না যায় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে এবং নিয়মিত কেটে পরিষ্কার করতে হবে দ্রুত বাড়ার কারণে বাঁশ ঝাড় বিক্রি করে ভালো আয় করার সম্ভব। অনেকে আবার বাড়ির ভিতরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে বাঁশ চারা রোপন করে করে।চাইলেই এটি পাত্রে  বা বাগানে রাখতে পারে আবার কিছু ধরনের বাঁশ পানিতে রাখলেই হয়
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url