বিজ্ঞানীদের অবাক সাফল্য-কখনো ফুরাবে না বিদ্যুৎ!
বিজ্ঞানীরা বহুকাল ধরে স্বপ্ন দেখছিলেন এমন একটি জ্বালানীর উৎস আবিষ্কারের, যা কোনদিনও ফুরিয়ে যাবেনা এবং পরিবেশ এর উপর কোন ধরনের প্রভাব ফেলবে না।
বিজ্ঞানীদের এ স্বপ্ন, এইবার সত্যি হতে যাচ্ছে। একটি মাত্র উপায়ে বিজ্ঞানীরা এই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন আর তা হল নিউক্লিয়ার ফিউসন বা দুটি পারমানবিক সংযুক্তি।
কিন্তু এতদিন এই প্রযুক্তি আবিষ্কারের মধ্য একটি বাধা ছিল তা হল ফিউসন ঘটাতে গিয়ে যে পরিমান শক্তি খরচ হচ্ছিলো ফিসন থেকে সেই পরিমান শক্তি পাওয়া যাচ্ছিল না। সব শেষে দেখছেন বিজ্ঞানীরা সেই বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন । এখানে একটি ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে, তা হল ফিসন ও ফিউসন কিন্তু এক কথা নয়।
প্রথমে ফিসন নিয়ে আলোচনা করা হল: আমরা জানি পরমানু হচ্ছে পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা, যা ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন এর সমন্বয়ে গঠিত। প্রোটন আর নিউট্রন মিলে তৈরি হয় পরমানুর কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াস আর তার চার দিকে ঘুরতে থাকে ইলেকট্রন। কেন্দ্রটাকে যদি ভাঙ্গা যায় তাহলে যে শক্তি দিয়ে নিউটন, প্রোটন এক সাথে লেগে আছে তা মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে ।
আইনস্টাইন সুত্র অনুযায়ী, সামান্য পরিমান পরমানু ভেঙ্গে ফেললে ও তা থেকে যে শক্তি বেরিয়ে আসবে তার পরিমান হয় প্রচণ্ড। এই পরমানু ভাঙ্গার প্রক্রিয়া কে বলে ফিসন।
পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে পারমানবিক বোমা সহ মুল সবগুলোর বেপারটাই একই। পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এই ফিসন ঘটাতে হয় নিয়ন্ত্রিত ভাবে, যাতে সৃষ্ট তাপ দিয়ে পানি গরম করে বাষ্পীয় টারবাইন চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। আর বোমার ক্ষেত্রে ফিসন হয় অনিয়ন্ত্রত তাই তাপ হয়েও ওঠে ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র।
পারমানবিক ফিউসন হচ্ছে ঠিক ফিসন এর উলটো। যার অর্থ জোরা লাগা। এখানে পরমানুকে ভাঙ্গা হয়না বরং হাইড্রোজেন গ্যাস এর দুটি পারমানুকে অতি উচ্চ তাপ ও চাপ প্রয়োগ করে জোরা লাগানো হয়। যার ফলে নিউক্লিয়াসের ভিতর বিপুল পরিমানে শক্তি বাহিরে বেরিয়ে আসে। সূর্য এবং অন্যান্য থেকে যে প্রচণ্ড শক্তির অবিরাম নির্গত হচ্ছে, তা ঘটছে ফিউসন প্রক্রিয়ার ফলেই। এ শক্তি ব্যবহার করে যদি বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যায়, তাহলে পরিবেশগত ক্ষতি না করেই বেশ পরিমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। গত ৬০ বছর ধরে হাজার হাজার লোক এই প্রয়াসে অবদান রাখায় বিজ্ঞানীরা এই অর্জন কে ঐতিহাসিক অর্জন হিসাবে অভিহিত করেছেন।